![](../2024/07/04/ak_1720093061.jpg)
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৪৭০ জন বিজয়ী চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৩৬ জনের বার্ষিক আয় ৫০ লাখ ১ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা। ৪২ জন চেয়ারম্যানের আয় কোটি টাকার অধিক।
এছাড়াও ৮ জনের বার্ষিক আয় ২ লাখ টাকার কম। ১২৪ জনের বার্ষিক আয় ২ লাখ ১ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা। ২০৪ জন চেয়ারম্যানের বার্ষিক আয় ৫ লাখ ১ টাকা থেকে ২৫ লাখ টাকা। ২৫ লাখ ১ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকা আয় করেন ৫১ জন চেয়ারম্যান।
বৃহস্পতিবার (৪ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যানদের তথ্যের বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন শীর্ষক’ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য উঠে আসে। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সম্প্রতি পাঁচ ধাপে ৪৬৯ উপজেলায় ভোট শেষ করে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন। এছাড়া বান্দরবানে রোয়াংছড়ি উপজেলা ভোট স্থগিত হলেও সেখানে ১ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী থাকায় ৪৭০ জন চেয়ারম্যান নিয়ে এ বিশ্লেষণ করে সুজন। দেশে উপজেলার সংখ্যা ৪৯৫টি।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী ৪৭০ উপজেলা চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৩৬০ জন পেশায় ব্যবসায়ী। যা বিজয়ী চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৭৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। ৪৮ জন চেয়ারম্যান নিজেদের পেশা হিসেবে কৃষিজীবী বলে উল্লেখ করেছেন।
বিজয়ী চেয়ারম্যানদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী ৭৬ দশমিক ৬০ শতাংশ ব্যবসায়ী জানিয়ে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরাও জানি মূল সংখ্যাটা আরও বেশি। অনেকে আসলে ব্যবসাই করেন। ব্যবসার সংখ্যা আরও বেশি। ব্যবসায়ী হতে পারে তাতে সমস্যা নাই। তবে এখানে টাকার খেলা থাকলে সমস্যা। যদি টাকা দিয়ে মনোনয়ন কিনে, ভোট কিনে।
ভোটার উপস্থিতির হার নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, যা দেখানো হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ আছে, প্রশ্ন আছে? তাও সন্তোষজনক না। ৫০ শতাংশ পার হয়নি।
নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি যা বলা হয়েছে তা ছিল কি না বলে সংশয় প্রকাশ করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, নির্বাচনে ভোটারদের অনীহা ছিল। রাজনৈতিক দলগুলো ভোট বর্জন করছে। এটা একই সুতোয় গাঁথা। মূল কারণ হলো আস্থাহীনতা। জনগণের আস্থাহীনতা নির্বাচন কমিশনের ওপর।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ও সুজনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, কৌশলগত দিক ছিল আওয়ামী লীগের। সেখানে তারা কিছুটা হলেও সাকসেসফুল। কারণ ভোটটা ওপেন করে দেওয়ায়।
উপজেলায় নির্দলীয় প্রতীকে ফিরে যাওয়া উচিত হবে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। বলেন, জনগণ এবং জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকে। সেই জিনিসটা রাখতে পারলে ভালো। দলীয় মার্কা নিয়ে না আসাই ভালো। যে কারণে জনগণ এত সম্পৃক্ত হয়েছে। না হলে ৩৬ শতাংশ হতো না। ১৬ শতাংশ হতো।
বিরোধীদলের স্থানীয় সরকারের ভোটে অংশ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন মনসুর। তিনি বলেন, নির্দলীয় ব্যক্তি হিসেবে এসে নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করে নিতে পারতেন।
স্থানীয় সরকারের এসব প্রতিষ্ঠানকে ক্ষমতায়িত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় চাইলে তাদের যা খুশি করতে পারে। এটা ঠিক নয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সব কর্তৃত্ব, সেটা হওয়ার কথা নয়। উপজেলার আর্থিক সক্ষমতা নাই। সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
কেন্দ্র থেকে বিকেন্দ্রীকরণের চিন্তা করে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে ক্ষমতায়িত করতে হবে বলে মনে করেন মনসুর। যা সয়ংক্রিয়ভাবে হবে যেটা রাজনৈতিকভাবে ঠিক করতে পারবে না বলে জানান তিনি।
আজকালের খবর/বিএস