প্রকাশ: বুধবার, ৩ জুলাই, ২০২৪, ৬:২৭ PM
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় ভাটের চর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় সহকারী সুপার নিয়োগে লিখিত পরীক্ষা দিতে এসে ‘প্রক্সি’ জালিয়াতিতে ধরা পড়েছেন রসুলপুর বাতিনিয়া আলিম মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল শামসুল আলম। অত্র মাদরাসার প্রাক্তন ছাত্র ও খন্ডকালীন শিক্ষক রিদওয়ানের হয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন শামসুল আলম।
গত ৭ জুন উপজেলার টেঙ্গারচর ইউনিয়নের ভাটেরচর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে এলে নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে জানাজানি হলে ওই চাকরিপ্রার্থীর জালিয়াতি ধরা হয়। পরে তাকে আটক ও পুলিশে সোপর্দ না করে ছেড়ে দেয় নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা।
বরিশাল জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলায় শামসুল আলমের বাড়ি বলে জানা গেছে। বর্তমানে টেংগারচর ইউনিয়নের মধ্য ভাটেরচর গ্রামে বাড়ি করে বসবাস করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন গজারিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য মো. জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, গত ৭ জুন সরকারি মাদরাসা আলিয়ার প্রিন্সিপাল ডিজির প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ, মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোসলেম উদ্দিন, সভাপতি আব্দুল মতিনের উপস্থিতিতে ভাটেরচর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সহকারী সুপার শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় অংশ নিয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন রসুলপুর বাতেনিয়া আলিম মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল শামসুল আলম। পরে মাদরাসা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। কিন্তু, লিখিত পরীক্ষার খাতার সঙ্গে মৌখিক পরীক্ষায় তাহার পরিচিতি পেলে তৎক্ষণাৎ রেজাল্ট সিটে স্বাক্ষর হতে আমি বিরত থাকি। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে তার হয়ে আরেক জনের পরীক্ষা দেওয়ার কথা তিনি স্বীকার করেন। এই প্রক্রিয়াটি ভারপ্রাপ্ত সুপার মোসলেম উদ্দিন ও কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন সম্পূর্ণ করেছেন বলে গণমাধ্যম কর্মীরা জানতে পারে।
এই মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোসলেম উদ্দিন ২০২২ সালে বিশজন ভুয়া ছাত্র দেখিয়ে মাদরাসার ভোটার তালিকায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করার পাঁয়তারা করছেন। এই বিষয়ে কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় দুর্নীতির খবরটি প্রকাশিত হয়। তার পাশাপাশি ভুয়া এতিম ছাত্র দেখিয়ে প্রতি বছর সমাজ সেবা অফিস থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ভারপ্রাপ্ত সুপার মোসলেম উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
প্রক্সিদারি শিক্ষক সামছুল আলম বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষায় কন্ট্রাকে প্রক্সিতে অংশগ্রহণ করে থাকেন, এমন প্রমাণ গনমাধ্যম কর্মীদের হাতে এসেছে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী সামসুল আলম ও ভারপ্রাপ্ত সুপার মোসলেম উদ্দিন নিয়োগ পরীক্ষার প্রক্সির বিষয়টি গনমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে স্বীকার করেন এবং পরে পরীক্ষা বাতিল করা হয়।
রসুলপুর বাতেনিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোক্তার হোসেন বলেন, ভাইস প্রিন্সিপাল সামসুল আলম যে কাজটি করেছে তা নিয়োম বহির্ভূত। একজন ইনডেক্সধারি শিক্ষক এ কাজ করতে পারেন না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনূর আক্তার বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সিতে ধরা খাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ঘটনায় উপস্থিত নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আজকালের খবর/ওআর