প্রকাশ: সোমবার, ১ জুলাই, ২০২৪, ৭:৫৮ PM আপডেট: ০১.০৭.২০২৪ ৮:০৫ PM
![](../2024/07/01/ak_1719842585.jpg)
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যু রোহিঙ্গা নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের পর এবার তিনি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের দিকে চোখ ফিরিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমি ছবির নাম বা প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করতে চাই না। তবে ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করবেন একজন নারী এবং তাকে ঘোড়া চালাতে জানতে হবে। কথা প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন চিত্রনাট্য লেখার কাজ প্রায় শেষ। ছবিটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে আগামী ডিসেম্বর মাসে।
পরিচালক অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড একজন ইস্যুভিত্তিক চলচ্চিত্রের নির্মাতা হিসেবে পরিচিত। এই ধারাবাহিকতায় তার সর্বশেষ ছবি ছিল রোহিঙ্গা। এ ছবিতে তিনি চাক্ষুখ দেখা ঘটনাবলি একটি গল্পের মধ্য দিয়ে তুলে এনেছেন। এখানেই ছবিটির সার্থকতা যে তিনি যদি শুধু মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা স্রোতের চিত্রধারণ করে ছবি নির্মাণ করতেন তাহলে সেটা হতো একটি দলিল বা প্রামাণ্যচিত্র। সেটাকে চলচ্চিত্র বলা যেত না। কারণ নন্দনতত্ত্বের ভাষায় বলা হয়ে থাকে ‘রি-প্রোডাকশন অব লাইফ ইজ নট আর্ট।’ এজন্য রোহিঙ্গােে স্রোতের চিত্রের সঙ্গে তিনি সংযোজন করেছেন একটি গল্প। সেই গল্পও রোহিঙ্গাদেরই। এভাবেই রোহিঙ্গা হয়ে উঠেছে একটি ইস্যুভিত্তিক চলচ্চিত্র।
এই পরিচালকের অন্তর্ধান ছবিটিও নির্মিত হয়েছে ফারাক্কা ইস্যুকে কেন্দ্র করে। পরিচালক ডায়মন্ড ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ইতিহাসের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন। একটি নিখাদ ও পরিশুদ্ধ জাতিসত্তা তিলোত্তমা হয়ে উঠে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের আলোকে। সুতরাং এর প্রতি একটা সহজাত আকর্ষণ থাকবে যে কোনো সচেতন মানুষেরই। চাপাইনবাবগঞ্জের মানুষ হিসেবে বরেন্দ্রভূমির নাচোলের প্রতি এই পরিচালকের একটা দূবর্লতা রয়েছে। অত্র এলাকার নানা লোকেশনে তিনি নাটকও নির্মাণ করেছেন। কিন্তু সব কিছুকে ছাড়িয়ে অনন্য হয়ে উঠেছে ইলামিত্রের নাচোল তথা সাঁওতাল বিদ্রোহকে বিষয়বস্তু করে নির্মিত ‘নাচোলের রাণী’ ছবিটি।
ইলামিত্র ও তার স্বামী রমেন মিত্রের নেতৃত্বে সংঘটিত হয়েছিল ‘নাচোল কৃষক সাঁওতাল বিদ্রোহ’। তেভাগা আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১৯৫০ সালের ৫ জানুয়ারির এই আন্দোলন অনেকের মন থেকে মুছেও গিয়েছিল। সেই বিস্মৃতির আড়াল থেকে পরিচালক ডায়মন্ড বের করে এনেছেন নাচোলের অস্তিত্বের অন্তরাত্মাকে। তার চলচ্চিত্রটিকে কেন্দ্র করে নাচোল পাদপ্রদীপের আলোয় আসে। বলতে গেলে অন্ধাকারে থাকা সেই নাচোল এখন অনেক উন্নত। আজকের নাচোল অনেককে অনেকভাবেই স্মরণ করছে। কারো নামে রাস্তা হচ্ছে, কারো নামে এটা-ওটা হচ্ছে। কিন্তু নাচোল প্রায় অন্ধকার থেকে আলোয় আনা পরিচালক অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড সেখানে স্মরণ হন না। তাতে ডায়মন্ডের হয়তো কিছু যায় আসে না। কিন্তু যুগে যুগে যারা অন্ধকারে আলো ছড়িয়ে যান তারা আড়ালেই থেকে যান। দিশারী জনেরা কখনো গৌরবাম্বিত হওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকেন না। কিন্তু দিশারী বা বিজ্ঞজনের অবমূল্যায়নে কেবল ইতিহাসই দূর্বল হয়।
আজকালের খবর/আতে