বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুখে হাসি নেই অনেক দিন। বিপুল পরিমাণ টাকা পাওনা থাকলেও তা ফেরৎ দিচ্ছেন না প্রযোজনা সংস্থাগুলো। সে ধারাবাহিকতায় এবার ঈদে তাই বেতনতো দূরের কথা বোনাসও হবে কিনা সংশয় রয়েছে। এমন খবরে তিন দশকের তামাদি হয়ে যাওয়া টাকা ফেরৎ দিয়ে অনন্য নিদর্শন স্থাপন করলেন লিবার্টি শ্যামলী প্রডাকশনের কর্ণধার এম এ মুহিত।
আজ মঙ্গলবার এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে সংস্থার পাওনা টাকা ফেরৎ দেন এম এ মুহিত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রদর্শক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন।
তিনি বলেন, এক সময় লিবার্টি শ্যামলী প্রডাকশন হাউজ বড় প্রযোজনা সংস্থা ছিলো। অনেক ভালো ভালো সিনেমা সে হাউজ থেকে নির্মাণ হয়েছে। সর্বশেষ দেওয়ান নজরুলের পরিচালনায় ‘আসমান জমিন’ সিনেমাটি নির্মাণ করে ওই হাউজ। ওই সিনেমার পাওয়া চার লাখ সাত হাজার টাকা প্রযোজক এম এ মুহিত ভাই ফেরতের সিদ্ধান্ত নেন। এ বিষয়ে তিনি আমার সঙ্গে পরামর্শ করলে আমি এফডিসির এমডিকে ফোনে জানাই। তিনি আমাকে অনুরোধ করেন সম্ভব হলে ঈদের আগেই যেন টাকাটা ফেরতের ব্যবস্থা করি। তাহলে কর্মচারীদের হাতে ঈদের আগে কিছু টাকা তুলে দেওয়া যাবে। আমি মুহিত ভাইকে জানালে তিনি রাজি হন। আজ এমডি সাহেবের কাছে সেই টাকাটাই ফেরৎ দিলাম।
তিনি বলেন, অনেক টাকাই তামাদি হয়ে গেছে। আমার মতে যাদের সামর্থ্য আছে তাদের উচিৎ এফডিসির পাওয়া স্বেচ্ছায় ফেরৎ দেওয়া।
এ ব্যাপারে জনসংযোগ কর্মকর্তা হিমাদ্রী বড়ুয়া বলেন, বেতন হচ্ছে না। বোনাস হবে কিনা সেটা এখনই বলতে পারছি না। এখনও বোনাস দিতে দশ লাখ টাকা ঘাটতি। এ সময় মুহিত সাহেবের পাওয়া টাকা ফেরৎ দিয়ে অসাধারণ এক কাজ করেছেন। সত্যি বলতে মিয়া আলাউদ্দিন ভাই সহযোগিতা না করলে ঈদের আগে এই টাকা ফেরৎ সম্ভব ছিলো না। আমরা দু’জনের কাছেই কৃতজ্ঞ।
তিন দশকের আগে নির্মিত ‘আসমান জমিন’ সিনেমাটি চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন দেওয়ান নজরুল। ফোক ফ্যান্টাসি ঘরানার মাল্টিকাস্টিং ‘আসমান জমিন’ সিনেমায় ওয়াসিম, অনজু, ইলিয়াস জাবেদ, নূতন ছাড়াও আজিম সুজাতা, সুচন্দা, আহমেদ শরীফ, মঞ্জুর রাহী, শওকত আকবর, মিনু রহমান, দিলদার, জাম্বু, জাহানারা ভূইয়া প্রমুখ অভিনয় করেছেন।
সিনেমাটিতে দেওয়ান নজরুলের সহকারী হিসেবে এফ আই মানিক ও রানা হামিদ কাজ করেছেন। যোশেফ শতাব্দির কাহিনী ও সংলাপে সংগীতে ছিলেন আলম খান আর ক্যামেরায় অরুন রায়।
স্মৃতি হাতরে এফ আই মানিক বলেন, নব্বই দশকের মাল্টিকাস্টিং সিনেমা। ভালোই ব্যবসা করেছিলো। চমৎকার কিছু গানও ছিলো। প্রযোজক মুহিত ভাই কোনো কার্পণ্য রাখেননি ছবিটি নির্মাণে।
আজকালের খবর/আতে