স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, সিনেমায় তামাকের দৃশ্য দেখানো বন্ধ করতে হবে। নেশা হয় এমন ফ্লেভার ও রং তামাকে ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে। বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (৩১ মে) সকালে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত সেমিনারে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
আসন্ন বাজেটে তামাকজাত পণ্যের দাম ৫০ থেকে ৯০ শতাংশে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (৩১ মে) সকালে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত সেমিনারে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, আসন্ন বাজেটে তামাকজাত পণ্যের দাম ৫০ থেকে ৯০ শতাংশে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া ২০৪০ সালে তামাকমুক্ত দেশ গড়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, নিজ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন যেকোনও প্রতিষ্ঠানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, বৈশ্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণে আজকের এ দিনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৮৭ সাল থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সরকার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও তামাক বিরোধী সংগঠন সমূহ এ দিবসটি পালন করে আসছে। তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ প্রতিহত করি, শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করি এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও তামাক বিরোধী র্যালি, মেলা, আলোচনা সভা, সম্মাননা প্রদান, ক্রোড়পত্র প্রকাশসহ ব্যাপক পরিসরে বিভিন্ন আয়োজন করা হয়েছে।
ধূমপানের প্রত্যক্ষ ক্ষতি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, পরোক্ষ ধূমপানও অধূমপায়ীদের জন্য ক্ষতিকর। ধূমপান ও তামাক সেবনের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, ক্রনিক লাং ডিজিজসহ নানা অসংক্রামক রোগ দেখা দেয়। তামাকের কারণে পৃথিবীটাতে প্রতি বছর ৮৭ লাখ মানুষ অকালে মারা যায়।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান স্পিকার সামিটে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার যে অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন তা বাস্তবায়নে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি প্রনয়ণ, জাতীয় তামাক কর নীতি প্রণয়ন ও বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ও বাস্তবায়ন করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ও গণমাধ্যমে প্রচার প্রচারণা পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দুর্বলতা দূর করে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে খসড়া প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। খসড়া প্রস্তাবে যে বিষয়গুলো উল্লেখিত আছে তা হলো।
১ শিশু-নারীসহ অধূমপায়ীদের পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি হতে রক্ষায় পাবলিক প্লেস ও পরিবহন হতে ধূমপান এলাকা বাতিলের মাধ্যমে শতভাগ ধূমপান মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার প্রস্তাব।
২ কিশোর তরুণদের নেশার দিকে ধাবিত করতে তামাক কোম্পানিগুলো অযাচিত ভাবে ওটিটি, অনলাইন প্লাটফর্ম ও নাটক সিনেমায় ধূমপানের দৃশ্য প্রচার করছে। এগুলো বন্ধ করার প্রস্তাব যুক্ত হয়েছে।
৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, খেলাধুলার স্থান ইত্যাদি সীমানার ১০০ মিটারের মধ্যে তামাক বিক্রয় বন্ধ করা, এবং লাইসেন্স ব্যতীত তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
তামাকের আগ্রাসন হতে শিশু কিশোরদের সুরক্ষা প্রদান করে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন পরিবার-ভিত্তিক সচেতনতা ও সামাজিক আন্দোলনের উপর জোর দেন।
আলোচনা সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন তামাক নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে তামাক নিয়ন্ত্রণে জাতীয় সম্মাননা ২০২৪ তুলে দেন। আলোচনা সভা শেষে মন্ত্রী তামাক বিরোধী মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।
আজকালের খবর/এসএইচ