উপজেলা নির্বাচন বর্জনের দাবিতে বক্তব্য দেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী
‘বাজে এক পরিস্থিতির মধ্যে দেশ নিপতিত হয়েছে। আর্থিক অবস্থা চরম সংকটাপন্ন। বর্তমানে ন্যাশনাল রিজার্ভ এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৩ বিলিয়ন ডলারে। যে খাদ্য আমদানি করতে হয়, সে প্রয়োজনীয় খাদ্য কেনার টাকা আমাদের নেই। এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে দিনযাপন করতে হচ্ছে।’
বুধবার (১৫ মে) উপজেলা নির্বাচন বর্জনের দাবিতে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী রাজধানীর বিজয় নগর এলাকায় লিফলেট বিতরণ শেষে এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আজকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন ইসরাইলের সাথে গোপন সম্পর্ক নাকি বিএনপি’র। আমরা তো যুগ যুগ ধরে নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বলেছি। আপনাদের কী পরিস্থিতি? ইসরাইলের উড়োজাহাজ বাংলাদেশে নেমে কী দিয়ে গেছে? এটা মানুষের সবচাইতে বড় প্রশ্ন। আপনি এ ধরনের কথা বলেন; জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে সরাতে। বাংলাদেশ ব্যাংকে কী হচ্ছে; সেটি কি আপনি বলতে পারবেন?
রিজভী বলেন, সবই জানেন; আপনাদের ভিতরে যে অনাচার আর চক্রান্ত চলছে, যে লুটপাট চলছে, সেসব আড়াল করতে বিভ্রান্তমূলক কথা বলে জনগণের দৃষ্টিকে অন্য দিকে সরিয়ে দিতে চান। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার অন্য দেশে চলে গেছে। সে খবর অন্য দেশের একটি পত্রিকায় এসেছে।
তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন আগে বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বড় ধরনের কোনো ঘটনা বাংলাদেশ ব্যাংকে ঘটেছে। টাকার আমানত যেখানে থাকে, সঞ্চয়ের আমানতের গ্যারান্টি যেখানে থাকে, সেই বাংলাদেশ ব্যাংকে কী পরিমাণ চুরি এবং ডাকাতি হয়েছে; সেসব যাতে জনগণ না জানতে পারে, সে কারণে সাংবাদিকদের জন্য বিধি নিষেধ দেওয়া হয়েছে।
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এখন আস্তে আস্তে বোঝা যাচ্ছে, কী লুটপাট-চুরি হয়েছে, দেশের কত বড় সর্বনাশ করা হয়েছে; বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। থলের বিড়াল আস্তে আস্তে বের হতে শুরু করেছে। এগুলো ঢাকার জন্য হাছান মাহমুদ আর ওবায়দুল কাদের সাহেবরা বিভিন্ন ধরনের কথা বলে বেড়াচ্ছেন। বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি করছেন।
বিএনপি’র মুখপাত্র বলেন, ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী; তাকে নিয়ে কতই না কথা বললেন ওবায়দুল কাদেররা। একবারে বিএনপিকে না কি ক্ষমতায় নিয়ে আসবে। অথচ বিএনপি’র কোনো নেতা এ ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি। পরে দেখলাম সরকারের এক উপদেষ্টার বাসায় ডেনাল্ড লু বৈঠক করলেন। সরকারের লোকজন গোপনে গোপনে তার হাত পা ধরলেন কি না, কে জানে? জানতে পারলাম, মার্কিন কোম্পানিগুলোর দেনা পরিশোধের জন্য ডোনাল্ড লু চাপ দিয়েছেন। ডোনাল্ড লু'র হাত পা ধরছে, অনুনয় বিনয় করছে সরকারের লোকজন। তারা মুখে বলছে একটা, করছে আরেকটা। এরকম দ্বিচারিতা ও ভন্ডামি করে ক্ষমতায় টিকে আছে এরা।
এ সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন এদেশের আর কোনো ভবিষ্যৎ নেই উল্লেখ করে রিজভী বলেন, অবৈধ এই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারে মাধ্যমে নির্বাচন হলে জনগণ যাকে ভোট দেয়; সে সরকারের মাধ্যমে দেশে স্বস্তি আসবে।
আগামী ২১ তারিখ যে উপজেলা নির্বাচন হবে তাও জনগণ বর্জন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আজকালের খবর/ওআর