শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪
কোনদিকে এগুচ্ছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ
রায়হান আহমেদ তপাদার
প্রকাশ: সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪, ৭:৫২ PM
রাশিয়ার বিরুদ্ধে টানা দুই বছর ধরে সম্মুখযুদ্ধে লড়ছে ইউক্রেন। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে রাশিয়ার বাহিনীকে পিছু হটানোর পাশাপাশি নিজেদের হারানো ভূখণ্ড ফিরে পেতে কিয়েভের এ লড়াই। জোগান, কৌশল আর সমতল ভৌগোলিক সীমানার দিকে তাকালে বোঝা যায়, ইউক্রেনের বহুল আলোচিত পাল্টা আক্রমণের কৌশল গত বছর থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে বাস্তব কিছু ফলাফল এনে দিয়েছে। ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে বিস্তীর্ণ কৃষিজমি রয়েছে। তাই ওই অঞ্চলে যুদ্ধ করতে গিয়ে সুরক্ষা পাওয়া তুলনামূলক কঠিন। 

সেখানে রুশবাহিনী নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য কয়েক মাস সময় পেয়েছে। তাই বেশ গভীরভাবে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়তে পেরেছে তারা। সারি সারি পরিখা, ট্যাংক-বিধ্বংসী প্রতিবন্ধকতা, খাদ এবং নতুন খোঁড়া কয়েক কিলোমিটার গভীর বাংকারগুলো ইউক্রেনীয় বাহিনীর সামনে একধরনের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। উন্মুক্ত প্রান্তরগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে বারবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ইউক্রেনীয় সেনারা। কিন্তু সফলতা এসেছে সামান্যই। তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের মনোযোগ এখন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার, গাজা যুদ্ধ, দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতি নিবদ্ধ রয়েছে। এই ডামাডোলের মধ্যে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু প্রায় নীরবে চলে গেল। গত সপ্তাহে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ৮০০ দিনের মাইলফলক স্পর্শ করল। কিন্তু এই সংঘাত বন্ধে উল্লেখযোগ্য কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। যত দিন গড়াচ্ছে, ততই এই সংঘাতের প্রভাব যুদ্ধরত দুই দেশের সীমানার বাইরে গিয়ে পড়ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এর প্রতিঘাত ভোগ করছে। পরস্পরের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিশ্বে শান্তি যে কতটা ভঙ্গুর, তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে এই সংঘাত। ওয়াশিংটনে নীতিনির্ধারকদের মধ্যে ইউক্রেন নিয়ে তাদের নীতি কী হবে, তা নিয়ে বিবাদ চলছে। অনেক বিতর্কের পর গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ ইউক্রেনকে ৬১ বিলিয়ন সামরিক সহায়তা বিল অনুমোদন দিয়েছে।

দেশের ভেতরে ও আন্তর্জাতিক পরিসরে অংশীজনদের বড় চাপের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা শিশু গণতন্ত্র ইউক্রেনকে সমর্থন দিলেও এ ক্ষেত্রে তাদের বেশ কিছু ভূরাজনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থ কাজ করেছে। খেয়াল করলে দেখা যাবে, বড় বড় আন্তর্জাতিক উত্তেজনা ও কৌশলী কূটনৈতিক পদক্ষেপের মধ্যে ভারসাম্য আনতে গিয়ে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যে লড়াই চলছে, সেখানে সামরিক সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই সহায়তা সত্ত্বেও তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত ও বিপজ্জনক। যুক্তরাষ্ট্র যে ৬২ বিলিয়ন ডলারের বিল অনুমোদন করেছে, তার ২৩ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর জন্য, তাদের ফুরিয়ে যাওয়া রসদ সরবরাহের কাজে। ১৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ কিনতে। ১১ বিলিয়ন দেওয়া হবে ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকাণ্ডে জোগাতে এবং ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দাদের তথ্য আদান-প্রদান ব্যবস্থা উন্নত করতে। আর আট বিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে বেসামরিক খাতে। 

সামরিক সহায়তা অনুমোদনের খবরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বেশ উৎফুল্ল। তিনি ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দুই পার্টিকেই ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বিশেষ করে প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। জেলেনস্কি মনে করেন, এ ঘটনা ঐতিহাসিক দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকবে। জেলেনস্কি বলেন, বিশ্বের জন্য গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা অপরিহার্য। যুক্তরাষ্ট্র যতক্ষণ গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা সুরক্ষা দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সেগুলো শক্তিশালী থাকবে। আমেরিকা তোমাকে ধন্যবাদ বলে তিনি তার বিবৃতি শেষ করেন। অন্যদিকে মস্কোয় ক্রেমলিন মুখপাত্রের অবস্থান ছিল পুরোপুরি ভিন্ন। দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ইউক্রেনকে নিরাপত্তা সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত এই সংঘাতকে আরো খারাপ দিকে নিয়ে যাবে। পেসকভ বলেন, এই সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্র লাভবান হতে পারে, কিন্তু ইউক্রেনের ক্ষতি হবে।

গত ৮০০ দিনের সংঘাতের ভয়াবহ স্মৃতি কিয়েভের সরকারি কার্যালয় ও রাস্তায় প্রতিধ্বনিত হয়ে চলছে, তা বিশ্বকে স্মরণ করিয়ে দেয়, এই যুদ্ধ কতটা দুর্ভোগের জন্ম দিয়েছে। এই সংঘাত অবসান এবং শান্তি, ন্যায্যতা ও স্বাধীনতার আশাও বেঁচে আছে। যদিও সে ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জটা অনেক বড়। ইউক্রেন সংঘাত বন্ধে প্রচেষ্টা চলমান। সুইজারল্যান্ডসের নেতৃত্বে একটি শান্তি সম্মেলন করার আয়োজন চলছে। জুন মাসে বার্গেনস্টোক রিসোর্টে সম্মেলনটি হওয়ার কথা। সেখানে পোপ ফ্রান্সিসকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এই সম্মেলনে আসা প্রতিনিধিরা ইউক্রেনের জন্য একটা ন্যায্য ও টেকসই শান্তির পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে। বিভিন্ন দেশ থেকে যাওয়া ১৬০ জনপ্রতিনিধি ইউক্রেন সংঘাত বন্ধের উদ্দেশ্যে নেওয়া আগের পরিকল্পনাগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক আইনের ওপর ভিত্তি করে একটা শান্তি পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এই সম্মেলনে সংঘাতের মূলে যে দেশটি রয়েছে, সেই দেশটিকেই আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। 

সম্প্রতি সুইস সরকার ইঙ্গিত দিয়েছে, রাশিয়াকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। সুইস সরকার তাদের এই অবস্থানের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছে, মস্কোকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানোর ব্যাপারে তাদের ইচ্ছা ছিল। কিন্তু রুশ সরকারের অংশগ্রহণের ব্যাপারে আগ্রহের ঘাটতি রয়েছে। ইউক্রেন সংঘাতের মতো বিতর্কিত ইস্যুতে কূটনৈতিক সম্পর্কের যে জটিলতা, তার মধ্যে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে একটা সংলাপের আয়োজন করা অনেক কঠিন। আরেকটি ঘটনাও এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়াকে রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহারের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র নির্দিষ্ট রুশ নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে যে রাশিয়া যা করেছে, সেটি রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ে যে আন্তর্জাতিক সনদ আছে, তার পরিপন্থী।

এমনকি রাশিয়ার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে ইউক্রেনের সেনাদের বিরুদ্ধে চোকিং এজেন্ট ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। ইউক্রেন সংঘাত সমাধান, এ মুহূর্তে অধরা একটি বিষয়। সংঘাতের ধরনটি দীর্ঘস্থায়ী হওয়া সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়ে চলেছে। এই যুদ্ধে ভøাদিমির পুতিনের বিজয় মানে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে কারা রাশিয়ার পরবর্তী শিকার, সেই শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। সম্প্রতি সরকারিভাবে ফ্রান্স প্রথম ইউক্রেনে সেনা পাঠাল। ইউক্রেনের ৫৪তম ইনডিপেনডেন্ট ম্যাকানাইজড ব্রিগেডকে সহযোগিতা করার জন্য ফরাসি সেনা পাঠানো হয়েছে। এই সেনারা ফ্রান্সের তৃতীয় পদাতিক রেজিমেন্টের সদস্য। ফ্রান্সের ফরেন লিজিয়ন বা বিদেশিদের নিয়ে গঠিত সেনা ইউনিটের মূল অংশ তারা। ২০২২ সালে ফ্রান্সের ফরেন লিজিয়নে বেশ কিছুসংখ্যক ইউক্রেনীয় ও রাশিয়ান ছিলেন। যুদ্ধ শুরুর পর তাদেরকে ইউনিটটি ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ইউক্রেনীয়দের ক্ষেত্রে তাদেরকে নিজেদের বাহিনীতে যোগ দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। 

রাশিয়ানদের ক্ষেত্রে কী ঘটেছিল, সেটি অজানা রয়ে গেছে। ফরেন লিজিয়নটি এখন ফ্রান্সের সেনা কর্মকর্তাদের দ্বারা পরিচালিত হলেও অধস্তন কর্মকর্তা ও সেনাদের বেশির ভাগই বিদেশি। বিদেশি এই সেনারা তিন বছর মেয়াদে চুক্তিবদ্ধ হয়ে থাকেন। তিন বছর পর তারা ফ্রান্সের নাগরিকত্ব দাবি করতে পারেন। আর তারা যদি যুদ্ধ করতে গিয়ে আহত হন, তাহলে ফ্রান্সের নাগরিকত্ব পেতে তাদের অপেক্ষা করতে হয় না। বিদেশি ইউনিটে কোনো নারী সেনা নেই। ইউক্রেনে প্রথম ধাপে ফ্রান্সের ১০০ সেনা গেছেন। ধাপে ধাপে এক হাজার ৫০০ জন সেনা সেখানে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে ফ্রান্স। এই সেনাদের সরাসরি ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হয়েছে। যদিও গত কয়েক মাস ধরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর জন্য হুমকি দিয়ে আসছিলেন। শেষ পর্যন্ত পোল্যান্ড ও বাল্টিক অঞ্চলের দেশগুলোর বাইরে ন্যাটোতে তিনি তার এই প্রস্তাবের পক্ষে খুব সামান্য সমর্থন পেয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রও ন্যাটো সেনাদের ইউক্রেনে পাঠানোর বিরোধিতা করে আসছে। এখন ফ্রান্স ইউক্রেনে সেনা পাঠানোয় প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে। ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটোর সম্পৃক্ততা নিয়ে রাশিয়ার দিক থেকে যেটিকে সতর্করেখা বলা হচ্ছে, তা অতিক্রম করা হলো কি? এবং রাশিয়া কি এটিকে ইউক্রেনের সীমান্তের বাইরে বৃহত্তর যুদ্ধ হিসেবে দেখবে কিনা?

ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে অনেক সেনা পাঠানোর সক্ষমতা নেই ফ্রান্সের। ফ্রান্স সরকারের ইচ্ছা থাকলেও বাস্তবে বড় আকারের সেনা পাঠানোর ভিত্তিও নেই। খবরে প্রকাশ যে বিদেশি সেনাদের নিয়ে গঠিত পুরো ডিভিশনকে পাঠাতে চায় না ফ্রান্স। ২০২৭ সালের আগে তাদের সেই সামর্থ্যও তৈরি হবে না। বিদেশিদের নিয়ে গঠিত সেনা ইউনিটকে পাঠানোর সিদ্ধান্তটাই ফ্রান্সের জন্য অদ্ভুত রকম আপস। ফ্রান্স তাদের নিজ দেশের সেনাদের ইউক্রেনে নিয়োগ করছে না। হাতে গোনা কয়েকজন কর্মকর্তা বাদে কেউই ফ্রান্সের নাগরিক নন। ফ্রান্সের এই সিদ্ধান্তের অর্থ হচ্ছে, মাখোঁ তার দেশের ভেতরে বড় ধরনের বিরোধিতার মুখোমুখি না হয়েই সেনা পাঠাতে পেরেছেন। এটা তাকে কঠোর একজন নেতার ভাবমূর্তি তৈরি করতে সাহায্য করছে। 

এর কারণ হলো, ফরাসি কোনো সেনাকে ইউক্রেনে পাঠানো হচ্ছে না। আর সেনা পাঠানোর জন্য বাধ্যতামূলক নিয়োগের মতো কোনো অজনপ্রিয় কার্যক্রমও নেওয়া হচ্ছে না। ফলে মাখোঁ তার বিরোধীদের ক্ষোভের হাত থেকে বেঁচে গেছেন। এবং মানুষের এখানে একটা ক্ষোভও কাজ করেছে। আফ্রিকার সাহেল অঞ্চল থেকে সম্প্রতি ফরাসি সেনাদের চলে আসতে হয়েছে। সেই শূন্যস্থান পূরণ করে নিয়েছেন রাশিয়ান সেনারা। আফ্রিকার ফরাসিভাষী দেশগুলোর ওপর ফ্রান্সের যে নিয়ন্ত্রণ ও সেখান থেকে আসা সম্পদের যে প্রবাহ, সেটি বিপ্লব ও বিদ্রোহের কারণে ভেঙে পড়েছে। সরাসরি হোক আর ভাড়াটে বাহিনী ভাগনার গ্রুপের মাধ্যমেই হোক, এ ক্ষেত্রে রাশিয়ারও একটা সিদ্ধান্তমূলক ভূমিকা আছে।

আর এখন এটি প্রমাণিত যে এসব বিদ্রোহ ও বিপ্লবের পেছনে ভøাদিমির পুতিনের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। এই অপমানের আঁচ এলিসি প্রাসাদে গিয়েও লেগেছে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন কিয়েভ সফরে গিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনের যত দিন প্রয়োজন হবে, যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে প্রতিবছর ৩৭৫ কোটি মার্কিন ডলার করে দেওয়া হবে। ক্যামেরন বলেন, রাশিয়া যেভাবে ইউক্রেনের অভ্যন্তরে হামলা করছে, তাতে ইউক্রেন কেন আত্মরক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে, তা সহজে অনুমান করা যায়। কিন্ত ডেভিড ক্যামেরনের মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। মস্কো বলেছে, আরেকটি অত্যন্ত বিপজ্জনক বিবৃতি। ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ইউক্রেন সংঘাত ঘিরে এটি সরাসরি উত্তেজনা ছড়াবে, যা ইউরোপীয় নিরাপত্তার জন্য সম্ভাব্য হুমকি সৃষ্টি করবে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে একাধিকবার রাশিয়ার অভ্যন্তরে তেল শোধনাগারগুলোতে হামলা চালাতে নিষেধ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আশঙ্কা, এতে উত্তেজনা আরো বাড়বে।

ক্রেমলিন মুখপাত্র পেসকভ, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর বক্তব্যেরও নিন্দা জানান। এর আগে চলতি সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের ব্যবসাবিষয়ক ম্যাগাজিন ইকোনমিস্টকে বলেছেন, রুশ সেনারা যদি সামনে এগোতে থাকে এবং ইউক্রেন অনুরোধ করলে সেখানে স্থলসেনা পাঠানো হবে কি না, তা পশ্চিমাদের বিবেচনা করতে হবে। পেসকভ বলেন, মাখোঁর বক্তব্য ছিল বিপজ্জনক। তবে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করে বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়া যদি জয়লাভ করে, তবে ইউরোপে কোনো নিরাপত্তা থাকবে না। তবে এসব অতিরিক্ত জিনিসগুলো সরবরাহের ব্যাপারে ইউরোপীয় সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে এ মুহূর্তে স্থিতাবস্থা বজায় রাখাটাই ইউক্রেন সংঘাতের একমাত্র টেকসই বিকল্প বলে বিশেষজ্ঞ মহলের অভিমত।

লেখক : প্রবাসী, গবেষক ও কলাম লেখক। 

আজকালের খবর/আরইউ








সর্বশেষ সংবাদ
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কারফিউ তুলে নেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
একদফা দাবিতে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান বিএনপির
কোটা আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক ডিবি হেফাজতে
পাকিস্তানের বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস জয়ে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা
ঢাকায় ২০৯ মামলায় গ্রেপ্তার ২৩৫৭
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে রুপা-আপসানার প্রস্তাব
রিমান্ড শেষে কারাগারে নুর
ফেসবুক-টিকটকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি
শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভুল তথ্য প্রকাশ করে ক্ষমা চাইল ‘ইন্ডিয়া টুডে এনই’
জাবি শিক্ষকের ‘পদত্যাগ নাটক’
Follow Us
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : গোলাম মোস্তফা || সম্পাদক : ফারুক আহমেদ তালুকদার
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : হাউস নং ৩৯ (৫ম তলা), রোড নং ১৭/এ, ব্লক: ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮-০২-৪৮৮১১৮৩১-৪, বিজ্ঞাপন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৯, সার্কুলেশন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৮, ই-মেইল : বার্তা বিভাগ- newsajkalerkhobor@gmail.com বিজ্ঞাপন- addajkalerkhobor@gmail.com
কপিরাইট © আজকালের খবর সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft