প্রকাশ: সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ৮:০৭ PM
মতলব উত্তর উপজেলায় চলতি রবি মৌসুমে ১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন শীতকালীন সবজির চাষাবাদ হয়েছে এবার। সেই লক্ষ্যে মতলব উত্তর কৃষি বিভাগও সবজি উৎপাদনে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। তবে এবার প্রথমবারের মতো আইপিএম পদ্ধতিতে বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি উৎপাদনে কৃষক পরিবারগুলো অনেক লাভের মুখ দেখেছেন বলে কৃষক পরিবারগুলো জানিয়েছেন। আইপিএম পদ্ধতির এ কার্যক্রমে পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়েছে উপজেলার দুর্গাপুর, এখলাছপুর, গজরা, কলাকান্দা সাদুল্লাপুর, ইসলামাবাদ, বাগানবাড়ি এলাকায়। এ কার্যক্রমে উপজেলা কৃষি অফিসার ও কৃষিবিদ ফয়সাল মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করা হয়।
এ টিমে কাজ করছেন উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনসহ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহনাজ পারভীন, ফরহাদ হোসেন, মিজানুর রহমান, নাছির উদ্দন, শরিফুল ইসলাম, রেদোয়ানুল রহমান ও আল আমিন।
এদিক উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সবজি উৎপাদনের বহুল প্রচলিত, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আইপিএম পদ্ধতিতে বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি উৎপাদনে রবি মৌসুমে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষি বিভাগ। এতে করে বিষ ও কীটনাশকের ব্যবহার ও কমেছে এবং নিরাপদ সবজি সংগ্রহ করতে পেরে খুশি ভোক্তারাও। বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি উৎপাদনের ক্ষেত্রে রোগ সহনশীল আধুনিক জাত ব্যবহারসহ আধুনিক পদ্ধতিতে যেমন মালচিং পদ্ধতি, নেট হাউজের মাধ্যমে সবজি চাষাবাদ করা হচ্ছে। রোগ ও পোকামাকড় দমনের জন্য যান্ত্রিক পদ্ধতি যেমন হলুদ আঠালো ফাঁদ ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে ফেরোমন ফাঁদও পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যবহার করা হচ্ছে জমিতে। আর এসব পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে পোকামাকড় দমন না হলে বিভিন্ন ধরনের জৈব বালাইনাশক, সেক্স ফেরোমন, হলুদ আঠানো ফাঁদ ব্যবহার করা হচ্ছে এখন। তার পরেও রোগ বালাই দমন না হলে অনুমোদিত মাত্রায় কেমিক্যাল পেস্টিসাইড ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া কেমিক্যাল পেস্টিসাইড ব্যবহার করলে কৃষকদের পোস্ট হারভেস্ট ইন্টারভেল মেনে চলার জন্যও উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
উপজেলার ব্রাহ্মনচক ব্লকের অভিজ্ঞ এক কৃষক মো. কামাল হোসেন বলেন, চলতি বছরে ১৮ শতক জমিতে ফুলকপি চাষ করেছি। এতে আমার খরচ পরেছিল মাত্র ১০ হাজার টাকা। আর বাজারে ৩০ টাকা কেজি হিসেবে পাইকারীতে ফুলকপি বিক্রি করেছি ৩৫ হাজার টাকা। তিনি বলেন, রোগ ও পোকামাকড় দমনে সেক্স ফেরোমন ফাঁদসহ আইপিএম পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদনে এবার পোকার আক্রমন দেখা যায়নি। ফলে সবজি উৎপাদনে আগের চেয়ে অনেক গুণ বেশি লাভবান হয়েছি।
এদিকে উপজেলা কৃষি অফিসার ও কৃষিবিদ ফয়সাল মোহাম্মদ আলী জানান, পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় ইউনিয়নের ২শ’ কৃষকদের হাতে কলমে আইপিএম পদ্ধতিতে নিরাপদ সবজি উৎপাদন শেখানো হচ্ছে। চলতি রবি মৌসুম এবং খরিপ-১ মৌসুমের লাউ, বেগুন, টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি ইত্যাদি ফসল চাষে আইপিএম পদ্ধতির প্রয়োগ করে নিরাপদ সবজি উৎপাদন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। উপজেলার ৩টি স্থানে কৃষক মাঠ স্কুল চালু রয়েছে। সপ্তাহে ১ দিন আইপিএম-এ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কর্মকর্তারা তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।
আজকালের খবর/ওআর